পদ্মা সেতু সম্পর্কে ধারণা ও সাধারণ জ্ঞান
পদ্মা সেতু সম্পর্কে ধারণা ও সাধারণ জ্ঞান |
পদ্মা সেতুর বিস্তারিত তথ্য
বাংলাদেশের দীর্ঘতম ও বিশ্বের ১২২তম দীর্ঘতম সেতু হলো পদ্মা বহুমুখী সেতু৷ যা বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার নতুন অধ্যায়ের সূচনা৷ বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের অন্যতম স্বপ্নের সেতু পদ্মা সেতু৷ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ঢাকায় পৌছাতে যেখানে ৭-৮ ঘন্টা বা তারও অধিক সময় ব্যয় হতো এখন ৪-৫ ঘন্টায় রাজধানী ঢাকায় পৌছাতে পারবে৷
পদ্মা সেতু সম্পর্কে ধারণা সমূহ
👇👇👇👇
অফিসিয়াল নাম- পদ্মা বহুমুখী সেতু
প্রস্তুুত কারক- গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
নির্মাণ কাজ শুরু হয়- ২৬ নভেম্বর ২০১৪ সাল
নির্মাণ কাজ শেষ হয়- ২৩জুন ২০২২ সাল
পদ্মা সেতুর মূল দৈর্ঘ্য- ৬.১৫ কি.মি
সংযোগ সড়ক - ১২.১১ কি.মি
ভায়াডাক্ট রাস্তা - ৩.১৪ কি.মি
পদ্মা সেতুতে মোট খরচ হয় ৩০,১৯৩ কোটি টাকা (যা ৩.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার), সেতুর জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয় ১.৪৭১ হেক্টর । নদী শাসন করা হয়েছে ১৪ কি.মি (যা ১.৬ কি.মি মাওয়া প্রান্তে ও ১২.৪ কি.মি জাজিরা প্রান্তে)
পদ্মা সেতুতে ব্যাবহৃত সরঞ্জাম
মোট স্প্যানের সংখ্যা- ৪১টি
মোট পিলারের সংখ্যা- ৪২টি
মোট পাইলিং সংখ্যা- ২৬৪ টি
সেতুর প্রতিটি পিলারের জন্য পাইলিং- ৬টি
স্টিল ব্যাবহৃত হয়- ৯২,০০০ হাজার টন
বিশেষায়িত রিবার- ১,১৩০ টন
মোট সিমেন্ট ব্যবহার হয়- ২,৫০,০০০ টন
পাথর ব্যবহার হয়- ৩৮.৫ লাখ টন (যা মাওয়া প্রান্তে ৮.৫ লাখ টন জাজিরা প্রান্তে ৩০ লাখ টন)
সেতুতে ড্রেজিংয়ের পরিমান ৫ কোটি ঘন মিটার
পদ্মা সেতুতে রয়েছে-
৭৬০ মিলিমিটার ব্যাস এর গ্যাস পরিবহন লাইন
১৫০ মিলিমিটার ব্যাস এর টেলিফোন ডাক্ট ও ফাইবার অপটিক লাইন
৭ টি হাই ভোল্টেজ বিদ্যুৎ লাইন প্লাটফ্রম পাইল
৪ ল্যানের রাস্তা ও নিচতলায় রেলপথ
পদ্মা সেতু সম্পর্কে ধারণা |
দ্বিতল বিশিষ্ট কংক্রিট ও স্টিল দ্বারা নির্মিত এই পদ্মা সেতুতে ৩০টি দেশের নাগরিক কাজ করেছেন। ২০০ জনেরও বেশি ইঞ্জিনিয়ার কাজ করেছেন যার বেশিরভাগ বাংলাদেশী । যন্ত্রপাতি ও বিভিন্ন উপাদান আনা হয়েছে ১৫টি দেশ থেকে । পদ্মা সেতু প্রকল্পে ১১ জন সদস্যের বিশেষজ্ঞদল কাজ করেছেন যারা এসেছেন জাপান, ডেনমার্ক, কলম্বিয়া, ও আমেরিকা থেকে ।
পদ্মা সেতুর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট:-
পদ্মা সেতুর জন্য একটি নির্দিষ্ট অফিসিয়াল ওয়েবসাইট নেই, তবে এটি বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের অধীনে পরিচালিত হয়। সেতু সম্পর্কিত তথ্য যেমন প্রকল্পের বিবরণ, টোল হার, এবং অর্থনৈতিক প্রভাব জানতে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট bba.gov.bd অথবা bba.portal.gov.bd পরিদর্শন করতে পারেন
পদ্মা সেতুর বৈশিষ্ট্য-
পদ্মা সেতু দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলাকে সংযুক্ত করেছে। এর দ্বারা ২১ দেশের ২১ টি জেলার মানুষ উপকৃত হবে । সেতুর কারণে জিডিপি বৃদ্ধি পাবে ১.২৩ শতাংশ ।
বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক প্রকল্প, যা দেশের বৃহত্তম বহুমুখী সেতু। এটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পদ্মা সেতুর কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য নিচে উল্লেখ করা হলো:
১. গঠন ও দৈর্ঘ্য
- দৈর্ঘ্য: ৬.১৫ কিলোমিটার (৬,১৫০ মিটার)।
- প্রস্থ: ১৮.১০ মিটার।
- এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ স্টিল-ট্রাস সেতু।
২. প্রকৌশল ও নির্মাণশৈলী
- স্ট্রাকচারাল টাইপ: স্টিল ও কংক্রিটের সংমিশ্রণ।
- সেতুটি মূলত দুটি স্তরে তৈরি:
- উপরিভাগে যানবাহন চলাচলের রাস্তা।
- নিচের স্তরে রেলপথ।
- মোট ৪২টি পিলার, যা প্রতিটি নদীর গভীরে স্থাপিত।
- প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার।
৩. সংযোগ ও পরিবহন
- সেতুটি মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তকে সংযুক্ত করেছে।
- এটি ঢাকা ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেছে।
৪. নির্মাণ খরচ ও সময়কাল
- নির্মাণ শুরু: ২০১৪ সাল।
- উদ্বোধন: ২৫ জুন, ২০২২।
- মোট নির্মাণ ব্যয়: প্রায় ৩০,১৯৩ কোটি টাকা।
৫. বিশেষ প্রযুক্তি ও দক্ষতা
- সেতুর পিলার স্থাপনের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে অত্যাধুনিক হ্যামার পাইলিং প্রযুক্তি।
- নদীর গভীরতা এবং স্রোতের চাপে সেতুটি টিকিয়ে রাখতে অত্যন্ত টেকসই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।
৬. উপকারিতা
- অর্থনৈতিক উন্নয়ন: দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য সহজতর হয়েছে।
- ভ্রমণ সময় সাশ্রয়: যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে।
- পর্যটন শিল্প: সেতুকে কেন্দ্র করে নতুন পর্যটন সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।
৭. বিশ্বে স্বীকৃতি
- পদ্মা সেতু বাংলাদেশের সক্ষমতার প্রতীক হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে।
এই সেতুটি দেশের উন্নয়নের মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পদ্মা সেতুর ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে ।
পদ্মা সেতু শুভ উদ্ভোধন- ২৫ জুন, শনিবার ২০২২ সাল ।
পদ্মা সেতু পার হতে টোল ফি- ২০২২
- মোটর সাইকেলের জন্য টোল দিতে হবে ১০০ টাকা
- ছোট ট্রাকের জন্য (৫ টন পর্যন্ত) ১,৬০০ টাকা
- মাঝারি ট্রাক (৫ থেকে ৮ টন) ২,১০০ টাকা
- মাঝারি ট্রাক (৮ থেকে ১১ টন) ২,৮০০ টাকা
- বড় ট্রাক (তিন এক্সেল পর্যন্ত) ৫,৫০০ টাকা বড় ট্রাক (তিন এক্সেল পর্যন্ত) ৫,৫০০ টাকা
- টেইলারের জন্য ৬,০০০ টাকা
- কার ও জিপের জন্য ৭৫০ টাকা
- মাঝারি বাসের টোল দু’হাজার টাকা
- বড় বাসের জন্য ২,৪০০ টাকা
- মাইক্রোবাস ১,৩০০ টাকা
- নিবাসের জন্য ১,৪০০ টাকা টোল দিতে হবে
বিজয় বাংলা টাইপিং শেখার নিয়ম
মাইক্রোসফট ওয়ার্ড এর শর্টকাট key
আশা করি পদ্মা সেতু সম্পর্কে ধারণা ও জ্ঞান জানতে পেরে উপকৃত হলে এবং আরো তথ্য পেতে আমাদের সাথে থাকুন
ধন্যবাদ